হ্যালো বন্ধুরা আশা করি সবাই ভাল আছেন আজ আমি আপনাদের মাঝে শেয়ার করব জনপ্রিয় কয়েকটি প্রেমের কবিতা। কবিতা কম বেশি সবারই ভালো লাগে। তবে সেটা যদি হয়ে থাকে প্রেমের কবিতা তবে তো কথাই নেই। আজ আমরা আপনাদের মাঝে এমন কয়েকটি প্রেমের কবিতা শেয়ার করব।
জনপ্রিয় কয়েকটি প্রেমের কবিতা
বর্তমানে যে সব কবিতা জনপ্রিয় এবং মানুষের হৃদয় ছুঁয়ে গিয়েছে তার মধ্যে অন্য একটি ক্যাটাগরি কবিতা হলো প্রেমের কবিতা। যুগে যুগে বিভিন্ন সাহিত্যিক এবং কবিগণ ভালবাসা মানুষদের নিয়ে নানা রকম কবিতা আবৃত্তি করে গিয়েছেন। তাদের এই কবিতায় ফুটে উঠেছে ভালোবাসার দৃষ্টান্ত এবং ভালোবাসার সম্পর্ক কতটা মধুর হয়ে থাকে। আজ আমরা আপনাদের মাঝে এ ধরনের কয়েকটি কবিতা শেয়ার করব।
প্রেমের কবিতা আমাকে ভালোবাসার পর
এই কবিতায় কবি ফুটিয়ে তুলেছেন প্রেমের মুহূর্ত এবং একজন মানুষের জীবনে ভালোবাসা আসার পর তিনি কতটা পরিবর্তন হয়ে যান। কবিতা শুরুতে কবি বুঝিয়েছেন প্রত্যেক মানুষের জীবনে ভালোবাসা আসার পর কোন কিছুই আর আগের মতো থাকে না সবকিছু পরিবর্তন হয়ে যায়। ভালোবাসা মানুষকে এতটাই পাগল করে তোলে যে সব সময় মানুষ ভালোবাসার সেই মানুষটিকে চারদিকে কল্পনা করতে থাকে। সব সময় মনে হবে এই বুঝি ভালোবাসার মানুষটি সবকিছু ছেড়ে তার কাছে চলে আসছে।
প্রত্যেকটা মানুষের ভালোবাসার পর বাস্তব আর অবাস্তবের মধ্যে কোন মেয়ে খুঁজে পায় না। সবকিছু তার কিছু যেন স্বপ্নের মত মনে হয়। ভালোবাসা মানুষটির জন্য প্রত্যেকটি মানুষের সারারাত জেগে থাকার কারণে চোখ লাল হয়ে যায়। ঠিকমতো ঘুমোতে পারেনা এসব বিষয়বস্তু এই কবিতায় ফুটে উঠেছে। তো বন্ধুরা আপনাদের জন্য এই কবিতাটি আজ আমরা আপনাদের মাঝে শেয়ার করছি। আশা করি এই কবিতাটি পাঠ করার পর আপনারা বুঝতে পারবেন ভালোবাসা মানুষের জন্য কতটা গুরুত্বপূর্ণ এবং একটা মানুষের জীবনে ভালোবাসা আসার পর তার ঠিক কি পরিবর্তন হয় ।
আমাকে ভালোবাসার পর
হুমায়ুন আজাদ
আমাকে ভালবাসার পর আর কিছুই আগের মত থাকবে না তোমার,
যেমন হিরোশিমার পর আর কিছুই আগের মতো নেই
উত্তর থেকে দক্ষিণ মেরু পর্যন্ত।
যে কলিংবেল বাজে নি তাকেই মুর্হুমুহু শুনবে বজ্রের মত বেজে উঠতে
এবং থরথর ক’রে উঠবে দরোজাজানালা আর তোমার হৃৎপিন্ড।
পরমুহূর্তেই তোমার ঝনঝন-ক’রে ওঠা এলোমেলো রক্ত
ঠান্ডা হ’য়ে যাবে যেমন একাত্তরে দরোজায় বুটের অদ্ভুদ শব্দে
নিথর স্তব্ধ হ’য়ে যেত ঢাকা শহরের জনগণ।
আমাকে ভালবাসার পর আর কিছুই আগের মত থাকবে না তোমার।
রাস্তায় নেমেই দেখবে বিপরীত দিক থেকে আসা প্রতিটি রিকশায়
ছুটে আসছি আমি আর তোমাকে পেরিয়ে চ’লে যাচ্ছি
এদিকে-সেদিকে। তখন তোমার রক্ত আর কালো চশমায় এত অন্ধকার
যেনো তুমি ওই চোখে কোন কিছুই দ্যাখো নি।
আমাকে ভালবাসার পর তুমি ভুলে যাবে বাস্তব আর অবাস্তব,
বস্তু আর স্বপ্নের পার্থক্য। সিঁড়ি ভেবে পা রাখবে স্বপ্নের চূড়োতে,
ঘাস ভেবে দু-পা ছড়িয়ে বসবে অবাস্তবে,
লাল টুকটুকে ফুল ভেবে খোঁপায় গুঁজবে গুচ্ছ গুচ্ছ স্বপ্ন।
না-খোলা শাওয়ারের নিচে বারোই ডিসেম্বর থেকে তুমি অনন্তকাল দাঁড়িয়ে
থাকবে এই ভেবে যে তোমার চুলে ত্বকে ওষ্ঠে গ্রীবায় অজস্র ধারায়
ঝরছে বোদলেয়ারের আশ্চর্য মেঘদল।
তোমার যে ঠোঁটে চুমো খেয়েছিলো উদ্যমপরায়ণ এক প্রাক্তন প্রেমিক,
আমাকে ভালবাসার পর সেই নষ্ট ঠোঁট খঁসে প’ড়ে
সেখানে ফুটবে এক অনিন্দ্য গোলাপ।
আমাকে ভালবাসার পর আর কিছুই আগের মত থাকবে না তোমার।
নিজেকে দুরারোগ্য ব্যাধিগ্রস্ত মনে হবে যেনো তুমি শতাব্দীর পর শতাব্দী
শুয়ে আছো হাসপাতালে। পরমুহূর্তেই মনে হবে
মানুষের ইতিহাসে একমাত্র তুমিই সুস্থ, অন্যরা ভীষণ অসুস্থ।
শহর আর সভ্যতার ময়লা স্রোত ভেঙে তুমি যখন চৌরাস্তায় এসে
ধরবে আমার হাত, তখন তোমার মনে হবে এ-শহর আর বিংশ শতাব্দীর
জীবন ও সভ্যতার নোংরা পানিতে একটি নীলিমা-ছোঁয়া মৃণালের শীর্ষে
তুমি ফুটে আছো এক নিষ্পাপ বিশুদ্ধ পদ্ম-
পবিত্র অজর।
প্রেমের কবিতা কথোপকথন -৪
প্রেমের কবিতার মধ্যে অন্যতম একটি জনপ্রিয় কবিতা হল কথোপকথন। অনেকেই হয়তো এই কবিতাটি পড়ে থাকেন এই কবিতাটি সারমর আমার কাছে অনেক ভালো লেগেছে এবং এই কবিতাটি আমার কাছে অনেক বেশি রোমান্টিক মনে হয়েছে যার কারণে আমি আজ এই কবিতাটা আপনাদের মাঝে শেয়ার করছি।
এই কবিতাটির মধ্যে বোঝানো হয়েছে ভালোবাসা কতটা আনন্দদায়ক। আর সেই সাথে মাঝে মাঝে এই ভালোবাসা আপনার জীবনে কতটা বেদনা দায়ক মুহূর্ত নিয়ে আসতে পারে সে বিষয়ে তুলে ধরা হয়েছে। আপনি যদি ভালবেসে থাকেন তবে বৃষ্টির দিনে আপনি আপনার ভালোবাসার মানুষকে কতটা মিস করেন এবং তখন আপনার হৃদয়ে যে ভালোবাসা তা ফুটে ওঠে তাই এখানে তুলে ধরা হয়েছে। এছাড়াও আপনি যখন খুব কষ্টে থাকেন তখন আপনি আপনার ভালোবাসার মানুষটিকে কাছে পেলে যে সব যন্ত্রণা ভুলে যান এবং নতুন করে বাঁচতে শিখেন সেটাই এই কবিতায় ফুটে উঠেছে।
ভালোবাসা অমর এবং ভালোবাসার মানুষটি সব সময় নিজের কাছে সুন্দর এবং পবিত্র সেটি এখানে তুলে ধরা হয়েছে। এসব কারনে এই কবিতাটি আমার কাছে অনেক বেশি ভালো লেগেছে তাই আজ আমি আপনাদের মাঝে এই কবিতাটি শেয়ার করছি। আশা করি কবিতা আপনাদের কাছে ভালো লাগবে।
কথোপকথন -৪
রেদোয়ান মাসুদ
:মেঘ কি কখনও বৃষ্টি হয়?
: প্রায়ই তো হয়।
: যেটা বৃষ্টি হয় সেটা মেঘ নয়।
: তাহলে?
: সেটা ঝর্না, তাকিয়ে দ্যাখো আমার চোখে।
: এ কী, তোমার চোখে জল!
: জল নয়, ওটা বৃষ্টি।
: তাহলে যে বললে মেঘ কখনও বৃষ্টি হয় না!
: ওটা আগ্নেয়গিরি, তাকিয়ে দ্যাখো আমার চোখের মণিতে।
: এ কী, তোমার চোখ লাল!
: ওটা রক্ত নয়, দুঃখ।
: দুঃখ আবার কী জিনিস যেটা রক্তের মতো?
: ওটা দুঃখ নয়, হাত দিয়ে দ্যাখো আমার বুকে।
: এ কী, তোমার হৃদয় কাঁপছে!
: ওটা কম্পন নয়।
: তাহলে ওটা কী?
: ওটা না-পাওয়ার যন্ত্রণা, হাহাকার, আমাকে জড়িয়ে ধরে দ্যাখো।
: এ কী, তোমার শরীর শীতল কেন?
: ওটা বরফ নয়, আমার কপালে তাকিয়ে দ্যাখো।
: এ কী, তুমি ঘেমেছ!
: ওটা শিশির নয়, আমার হাতে স্পর্শ করে দ্যাখো।
: এ কী, তোমার হাতে চুম্বক কেন?
: ওটা চুম্বক নয়, আমার ঠোঁটে ঠোঁট রেখে দ্যাখো।
: এ কী, তোমার ঠোটে মধু!
: ওটা মধু নয়, বিষ; যে একবার খায় সেই মরে।
: তাহলে তুমি এখনও বেঁচে আছ যে!
: হ্যাঁ বেঁচে আছি, আমার চোখের পাতায় তাকিয়ে দ্যাখো।
: যেন শুকনো পাতা, মর্মর করছে!
: ওটা শব্দ নয় হাহাকার, আমার বুকে আবার হাত দিয়ে দ্যাখো।
: এ কী, তোমার হৃদয় আর কাঁপছ না যে!
: ওখানে এখন তুমি আছ, তাই শান্ত।
: আমি চলে গেলে?
: আবার অশান্ত!!
প্রেমের কবিতা ভালোবাসি
ভালোবাসা মানুষের জীবনে কতটা গুরুত্বপূর্ণ সেটি এই কবিতা ফুটে উঠেছে। এই কবিতায় ভালোবাসা মানুষের জন্য একটি মানুষ কতটা সাহসী এবং কি করতে পারে সেটি এই কবিতায় তুলে ধরা হয়েছে। ভালোবাসার জন্য প্রত্যেকটি মানুষের অসম্ভবকে সম্ভব করার যে দুঃসাহসিক কাজ করে থাকে সেটাই এই কবিতায় বলা হয়েছে।
ভালোবাসি
রেদোয়ান মাসুদ
শুধু একটি বার বলো ভালোবাসি
তোমাকে আর কোনদিন ভালোবাসতে হবে না।
মরুভূমির তপ্ত বালিতেও পা দিতে হবে না।
আমার জন্য তোমকে নিশি রাতে পা ভিজাতে হবে না।
আকাশ বাতাস শুনুক তোমার প্রতিধ্বনি।
সবাই জানুক কেউ আমাকে ভালোবেসেছিল।
আমার হৃদয়ের ডাকে কেউ সাড়া দিয়েছিলো।
শুধু এতটুকুই আমি চাই, এর চেয়ে বেশি চাই না।
কাছে আসো বা না আসো, তাতে আমার কোনো আপত্তি নেই।
হৃদয়কে না হয় একটি বার হলেও সান্তনা দিতে পারব
কেউতো অন্তত একটি বার হলেও প্রাণের ছোয়া দিয়েছিল।
কয়েক সেকেন্ডের জন্য হলেও শুকিয়ে যাওয়া নদীতে
আবার ঝড়ের বেগে অশ্রুর বন্যা বয়েছিল।
শুধু এতটুকুই আমি চাই, এর চেয়ে বেশি চাই না।
এর জন্য তুমি কি চাও?
হয়তোবা আমি তোমাকে আকাশের চাঁদটি এনে দিতে পারবোনা
পূর্ব দিকে উঠা সূর্যটিকেও হাতে তুলে দিতে পারবোনা।
কিন্তু পারবো তোমার জন্য আমি রজনীর পর রজনী জেগে থাকতে
পারবো আজীবন তোমার জন্য অপেক্ষা করতে।
হয়তো আমার এই শুন্য হৃদয়ে এক সময় কেউ স্থান করে নিবে
কিন্তু তুমিতো আর আমার হলে না।
কি হবে ভরে এই শুন্য হৃদয় ?
আমি তো চাইনি অন্য কেউ এসে আমার হৃদয়ে গোলাপ ফুটাক
পোড়া মন আবার সতেজ হয়ে উঠুক।
আমি চেয়েছি শুধু তোমার মুখ থেকে একটি বার হলেও
প্রতিধ্বনি হয়ে বেজে উঠুক একটি শব্দ ‘ভালোবাসি’
শুধু এতটুকুই আমি চাই, এর চেয়ে বেশি চাই না।
আশা করি আর্টিকেলটি আপনাদের কাছে ভালো লেগেছে। এই ধরনের আরো নতুন নতুন আর্টিকে পেতে আমাদের ওয়েবসাইট এখনো সাবস্ক্রাইব করে রাখুন। আর আমাদের ওয়েবসাইট অথবা আমাদের আর্টিকেল নিয়ে আপনার যদি কোন মতামত থেকে থাকে তবে অবশ্যই কমেন্টের মাধ্যমে আমাদেরকে জানাতে ভুলবেন না। আমরা দ্রুত আপনার সমস্যার সমাধান করার চেষ্টা করব। আর যদি আপনি আমাদের ওয়েবসাইট ইতিমধ্যে সাবস্ক্রাইব করে থাকেন তবে আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।